নারীর ক্ষমতায়ন ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ : রাজনীতি হোক নিজ পরিচয়ে-আয়শা খানম

একাদশ সংসদ নির্বাচনে আমরা দেখছি নারী প্রার্থীর সংখ্যা ৬৯ জন। ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের নারী প্রার্থীর সংখ্যা ছিল দু’জন। কয়েক দশক পার হয়ে তা আজ ৬৯-এ এসে দাঁড়িয়েছে। এটাকে নারীর ক্ষমতায়নে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন আমাদের বিশেষজ্ঞজন। উত্তরাধিকার সূত্র ছাড়াও নারীরা এখন নিজেদের যোগ্যতায় সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। জনকল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। আর এর সবই সম্ভব হয়েছে নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে। একটা সময় ছিল নারী সরাসরি নির্বাচন নয়, সংরক্ষিত আসনের মধ্য দিয়ে সংসদ সদস্য হতেন। কিন্তু দিনবদলের ইতিবাচক ধারায় এখন নারীরা সরাসরি নির্বাচন করেন। শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি তার আসনে জয়ী হন। রাজনীতিতে, সংসদে শুধু আসন রক্ষা করার মধ্য দিয়েই নারীর নীতিনির্ধারণে পুরো অংশগ্রহণ হয় কি-না- এ বিষয়ে কথা বলেছেন বিশিষ্টজনরা। আলঙ্কারিক পদ নয়, নীতিনির্ধারণে নারীর অংশগ্রহণ দেখতে চান সবাই। বাংলাদেশের রাজনীতি, সংসদ নির্বাচনে এবার আমরা তরুণদের অংশগ্রহণ দেখছি। তরুণরা এগিয়ে আসছেন। দেশ গঠনে তারাও অঙ্গীকারবদ্ধ। দেশের কল্যাণ কামনায় একটা ভালো রাজনীতির মুখ দেখবেন সবাই- এমন প্রত্যাশা করেন তরুণরা। নিজেদের রাজনীতি ভাবনা নিয়েও কথা বলেছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে শুরু করে এই ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে নারী প্রার্থীর সংখ্যা নিয়ে আছে একটি ছক।

ঘোড়সওয়ার, তীরন্দাজ নারী আমাদের উৎসাহ দেয়। তারা অনেক কষ্ট করে নিজেদের জায়গায় এসেছেন। নারীরা এখন পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীতেও ভালো করছেন। কিন্তু নারী শিক্ষার হার যেভাবে বাড়ছে, সেভাবে নীতিনির্ধারণ ও নীতির বাস্তবায়নে তাদের অংশগ্রহণ নেই। আর নারী যদি নীতিনির্ধারণে তার অবস্থান সংহত করতে না পারে, তাহলে নারীর ক্ষমতায়ন আশা করা যায় না।

সরকারি এবং আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানে অনুমোদিত পদের সংখ্যা ১০ লাখ ৯৭ হাজার ৩৩৪টি। এর মধ্যে নারীর সংখ্যা ৮৩ হাজার ১৩৩, অর্থাৎ শতকরা ৭ দশমিক ৬ ভাগ। বিচার বিভাগে বিচারক পদের ১০ শতাংশ নারী হলেও হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতি পদে এখনও নারীকে দেখা যায়নি। তবে আমার মতে, রাজনীতিতে নারীর উপস্থিতি লক্ষ্য করার মতো। কিন্তু এখানে একটি বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে আর তা হলো, পদে নারী থাকলেই হবে না। দেখতে হবে, তিনি প্রকৃত অর্থেই নারীর প্রতিনিধিত্ব করেন কি-না। নারী যদি হন পুরুষতন্ত্রের প্রতিনিধি, তাহলে সেটা তো আর নারীর ক্ষমতায়ন নয়। কারও স্ত্রী, সন্তান হয়ে নারী প্রতিনিধিত্ব করেন এবং কাজ সেভাবেই এগিয়ে চলে তবে সেটাকে আমি নারীর ক্ষমতায়ন বলব না।

লেখক :সভাপতি, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ

তথ্যসূত্র : দৈনিক সমকাল

Share this news on

You might also interest

Shima Moslem

মহিলা পরিষদের পথচলা – সীমা মোসলেম

আজ ৪ এপ্রিল ২০২৩। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক সংগঠন গড়ি, নতুন সমাজ বিনির্মাণ করি’—এই স্লোগান নিয়ে স্বেচ্ছাসেবী, গণনারী সংগঠন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ৫৩তম

Read More »
President, BMP

প্রয়োজন গণতান্ত্রিক বৈষম্যহীন প্রযুক্তিনীতি -ফওজিয়া মোসলেম

সমাজতান্ত্রিক নারীদের দ্বিতীয় সম্মেলনে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেিকন আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের প্রস্তাব উত্থাপনের পর নানা চড়াই-উতরাই অতিক্রম করে ৮ মার্চ বৈশ্বিক নারী আন্দোলন

Read More »

Copyright 2024 © All rights Reserved by Bangladesh Mahila Parishad, Developed by Habibur Rahman